
রিতুর চোখ ধাঁধানো গোল
ইয়াঙ্গুনের থুউন্না স্টেডিয়ামে ২৯ জুন ২০২৫-এ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে বাংলাদেশ নারী দল বাহরাইনকে ৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করে। ম্যাচের দ্বিতীয় গোলটি রিতু পর্ণা চাকমার ৩৫-গজের দূরপাল্লার শট থেকে আসে, যা কেবল একটি ‘গোলাজো’ নয়, বরং তার ছোট ভাইয়ের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে একটি আবেগঘন বার্তা। রিতু সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, “আজ তোর মৃত্যুবার্ষিকী। তিন বছর পার হয়ে গেল। সিজি, তোকে অনেক ভালোবাসি।” এই গোল তার শোক ও পেশাদার গর্বের প্রকাশ ছিল।
রিতুর গল্প
রাঙামাটির মগাছড়ি গ্রামে বেড়ে ওঠা রিতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনশাস্ত্রে পড়ছেন। তার পথ অনিশ্চয়তায় ভরা ছিল, কিন্তু তিনি ভাইয়ের স্মৃতি বুকে নিয়ে এগিয়েছেন। ২০২৪ সালের SAFF নারী চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে কাঠমান্ডুতে তার বাঁ পায়ের কার্ল শট বাংলাদেশকে শিরোপা এনে দেয়, তাকে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতিয়ে। বাহরাইনের বিপক্ষে তার গোল (২০২৪/২৫-এ ১২ গোল, ৪ অ্যাসিস্ট) তার সাহস ও প্রতিভার আরেকটি প্রমাণ।
ম্যাচের প্রভাব
পিটার বাটলারের ৩-৫-২ ছকে উইংয়ে খেলা রিতু বাংলাদেশ দলকে এগিয়ে নেন। তার গতিময়তা (৩.১ ড্রিবল প্রতি ম্যাচ) ও দূরপাল্লার শট (২.৮ শট প্রতি খেলা) বাহরাইনকে (FIFA র্যাঙ্কিংয়ে ৩৬ ধাপ পিছিয়ে) চাপে রাখে। দলের ৫৭% বল দখল ও ১৮টি শট (৪.২ xG) দলগত শক্তি দেখায়। রিতুর গোল দলের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়, যা মারিয়া মিজান (২ গোল) ও সাবিনা খাতুনের (১ গোল, ২ অ্যাসিস্ট) পারফরম্যান্সে প্রতিফলিত হয়।
মানবিক বার্তা
রিতুর গোল তার ভাইয়ের স্মৃতিতে উৎসর্গিত, যিনি ২০২২-এ বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। তিনি বলেছেন, “ফুটবল আমার জীবন। আমি ভাইয়ের নামে একটি একাডেমি খোলার স্বপ্ন দেখি।” এই জয় বাংলাদেশের এশিয়ান কাপের সম্ভাবনাকে শক্তিশালী করে, দলকে পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে রাখে। X-এ ফ্যানরা রিতুকে “আগুন” বলে প্রশংসা করে, তার গোলকে “আকাশে বার্তা” বলে।
আগামীর পথ
বাংলাদেশ মিয়ানমারের বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচে (২ জুলাই) জয়ের ধারা ধরে রাখতে চায়। রিতুর ফর্ম ও দলের ঐক্য এশিয়ান কাপের মূল পর্বে পৌঁছানোর সম্ভাবনা বাড়ায়। ফানরা তার একাডেমির স্বপ্নের জন্য সমর্থন জানায়, কিন্তু মিয়ানমারের গতিশীল ডিফেন্সের (২.৩ ইন্টারসেপশন প্রতি ম্যাচ) বিরুদ্ধে সতর্কতা চায়। রিতুর পরবর্তী গোল বাংলাদেশকে ইতিহাস রচনার কাছাকাছি নিয়ে যাবে।