
ইতিহাস গড়া
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল মিয়ানমারে ২০২৬ এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে (গ্রুপ সি) ২-১ গোলে স্বাগতিকদের হারিয়ে প্রথমবারের মতো মূল পর্বে উঠেছে। ২ জুলাই ২০২৫-এ এই জয়ে ঋতুপর্ণা চাকমার গোল ও সাবিনা খাতুনের নেতৃত্বে দল ইতিহাস গড়ে। ২০১০ সালে সাহেব আলীর হাতে শুরু হওয়া যাত্রা পিটার বাটলারের কোচিংয়ে স্বপ্নপূর্ণ হলো। ৬৯টি ফিফা-স্বীকৃত ম্যাচে (২৭ জয়, ১১ ড্র, ৩১ হার) বাংলাদেশ নারী দল এএফসি-তে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
সাহেব আলীর স্বপ্ন
১৯৭৭ সালে সাহেব আলী ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ২২ ছাত্রী নিয়ে নারী ফুটবল শুরু করেন, বলেছিলেন, “এই মেয়েদের মধ্যে ভবিষ্যতের ফুটবলার আছে।” অর্থাভাবে সেই উদ্যোগ বন্ধ হয়, কিন্তু ২০০৩ সালে ফিফা ও এএফসি-র চাপে বাফুফে নারী ফুটবল পুনরুজ্জীবিত করে। ২০০৭-এ ‘ভিশন এশিয়া’ ও ২০০৯-এ জাতীয় মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়। গোলাম রব্বানীর কোচিংয়ে ২০১০ সালে দক্ষিণ এশিয়ান গেমসে নেপালের বিপক্ষে অভিষেক হয় (১-০ হার), তবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-০ জয়ে প্রথম সাফল্য আসে।
উত্থানের পথ
২০১১-এ উজবেকিস্তানের বিপক্ষে অলিম্পিক বাছাইয়ে ৩-০ হারলেও, বয়সভিত্তিক দলগুলো সাফে ট্রফি জিতে আত্মবিশ্বাস তৈরি করে। ২০২২-এ কাঠমান্ডুতে নেপালকে ৩-১ হারিয়ে প্রথম সাফ শিরোপা আসে, ২০২৪-এ আবার জয়। সাবিনা খাতুন (২৮ গোল), ঋতুপর্ণা চাকমা (১২ গোল, ২০২৪/২৫), মাসুরা পারভীন ও কৃষ্ণা রানী দলকে নেতৃত্ব দেন। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৩৬ থেকে ১০২-এ উন্নতি হয়, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ের বিপক্ষে বড় জয় আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।
এশিয়ান কাপে সাফল্য
মিয়ানমারের বিপক্ষে ২-১ জয়ে (চাকমার ৩৫-গজের শট, খাতুনের অ্যাসিস্ট) বাংলাদেশ গ্রুপ সি-তে শীর্ষে। পিটার বাটলারের ৩-৫-২ কৌশল ও দলের ৫৭% বল দখল মিয়ানমারকে (১.৮ xG) চাপে রাখে। প্রাক্তন অধিনায়ক ডালিয়া আক্তার বলেন, “আমাদের স্বপ্ন ছোট বোনেরা পূরণ করেছে। সংগ্রামের দিনগুলো মনে পড়ে।” X-এ ফ্যানরা চাকমাকে “তারকা” বলে, বাটলারের কৌশলের প্রশংসা করে।
আগামীর পথ
এশিয়ান কাপ-২০২৬ (মার্চ-এপ্রিল) এশিয়ার শীর্ষ দলের (জাপান, অস্ট্রেলিয়া) মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সাবিনা ও ঋতুপর্ণার ফর্ম (১৫ গোল একত্রে) দলকে এগিয়ে নেবে। বাফুফে ঢাকায় একাডেমি পরিকল্পনা করছে, সাহেব আলীর স্বপ্নকে এগিয়ে নিতে। ফ্যানরা মিয়ানমারে পরবর্তী ম্যাচে (৬ জুলাই, ভিয়েতনাম) জয়ের আশা করে, যা ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে আরও উন্নতি আনবে।