
আইসিসির বার্ষিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পতন স্পষ্টভাবে ক্রিকেট দুনিয়ায় দেশের অবস্থানকে সংকটের মধ্যে ফেলেছে। দীর্ঘ দুই দশক পর বাংলাদেশের ওয়ানডে র্যাঙ্কিং দশের নিচে নেমে গিয়েছে, যা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য বেদনাদায়ক পরিণতি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এক সময় যেখানে ৫০ ওভারের ক্রিকেট ছিল গর্বের বিষয়, সেখানে এখন তা বড় চ্যালেঞ্জের মুখে।
আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ের পতন: কারণ এবং প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশের এই পতনের প্রধান কারণ এক বছরের খারাপ পারফরম্যান্স, বিশেষ করে ২০২৩ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়ী না হওয়া এবং মাত্র ছয়টি ম্যাচ জেতা। তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দেশের ক্রিকেটের সংকটের বড় চিত্র তুলে ধরছে। যদিও কয়েকটি সিরিজে জয় এসেছে, তবে তা অধিকাংশ সময়ই সান্ত্বনাদায়ক ছিল না। ওয়ানডে ম্যাচগুলোতে তাদের হারের ধরনও পীড়াদায়ক ছিল, যা তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে অনেকটাই দুর্বল করে দিয়েছে।
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) এবং বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যত
বাংলাদেশের ক্রিকেটের মূল সমস্যাটি দেশের ক্রিকেটের ভিত্তির মধ্যে নিহিত। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) একসময় ক্রিকেটের সেরা প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্র ছিল। কিন্তু বর্তমানে এটি প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে। এক সময় যেখানে প্রতিভা বিকাশ পেত এবং দেশের ভবিষ্যৎ তারকারা তৈরি হতো, এখন সেখানে প্রতিযোগিতা হ্রাস পেয়ে গেছে। খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিকও কমে গেছে, যা তাদের শখের জায়গায় পরিণত করেছে।
ডিপিএলের সংকট এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার প্রভাব
ডিপিএল-এর এই পতন বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দুর্দশার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বিসিবি যদি ডিপিএল-এর অবস্থা নিয়ে উদাসীন থাকে, তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যত এক বড় সংকটের মধ্যে পড়বে। নির্বাচকদেরও এখন ডিপিএল ম্যাচগুলোতে আগ্রহ কমে গেছে, যার ফলে ভবিষ্যতের খেলোয়াড়রা নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মে নিজেদের প্রতিভা তুলে ধরতে পারছে না।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য ডিপিএল-কে পুনর্গঠন করা অপরিহার্য। না হলে, জাতীয় দলের ব্যর্থতা অব্যাহত থাকবে এবং একসময় ক্রিকেটের গর্বিত ভিত্তিটি ভেঙে পড়বে।