একদিকে আইপিএল, অন্যদিকে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজ। দুই সংস্করণের খেলা হলেও প্রদর্শনী ছিল ভিন্ন। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচে একবারই দলীয় রান দেড় শ ছাড়িয়েছে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজের প্রথম তিনটি ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ এর মধ্যেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে।
অন্যদিকে আইপিএলে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের ১৬৫ রান ৯.৪ ওভারে টপকে গেছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এই অবিশ্বাস্য রান তাড়ার প্রভাব দেখা গেছে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচের পূর্ব সংবাদ সম্মেলনেও। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে দলের প্রতিনিধি হিসেবে আসা তাসকিন আহমেদকে সিরিজের চেয়ে আইপিএল নিয়েই বেশি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে।
তাসকিনের বাউন্সার সামলানো ও সাকিবের প্রত্যাবর্তন
তাসকিনও প্রশ্নের বাউন্সারগুলো সামলেছেন কৌশলে। আইপিএলে এত রান হচ্ছে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ কেন পারছে না—এই প্রশ্নের উত্তরে কন্ডিশনের প্রসঙ্গ তুলে তাসকিন বলেছেন, ‘আইপিএলের কন্ডিশন আর এখানের কন্ডিশন একটু ভিন্ন। প্রতিপক্ষও ভিন্ন। আইপিএলে হাই স্কোরিং ম্যাচ হয়, উইকেটও আলাদা। বাংলাদেশে তুলনামূলকভাবে হাই স্কোরিং ম্যাচ একটু কমই হয়। জিম্বাবুয়ে আসলে আন্তর্জাতিক সিরিজ, যাদের বিরুদ্ধেই খেলি না কেন, সবাই শতভাগ দিয়ে ম্যাচ জেতার চেষ্টা করি। হয়তো তুলনামূলকভাবে আইপিএলের তুলনায় তারা একটু দুর্বল, তবে আমাদের ভালো ক্রিকেট খেলেই জিততে হচ্ছে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ দুটি ম্যাচ দিয়ে দলে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার ও মোস্তাফিজুর রহমান। সাকিব ফিরেছেন ছুটি কাটিয়ে, সৌম্য সুস্থ হয়েছেন চোট থেকে। মোস্তাফিজ দলে ফিরেছেন আইপিএলের ছুটি থেকে। ছুটি পেলে মোস্তাফিজের মতো আইপিএল খেলতে পারতেন তাসকিন ও শরীফুল ইসলামও। তবে মোস্তাফিজকে ছুটি দিলেও তাসকিন-শরীফুলকে ছুটি দেওয়া হয়নি। মোস্তাফিজ যখন আইপিএল খেলেছেন, তখন তাসকিন ও শরীফুল খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, এরপর জিম্বাবুয়ে সিরিজ।
তাসকিনের ইনজুরি ম্যানেজমেন্ট ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ
তাসকিন আহমেদ পেসারদের ইনজুরি ম্যানেজমেন্ট প্রসঙ্গে বলেন, ‘নীতি প্রায় একই। তবে প্রত্যেকের শরীরের ধরন অনুযায়ী কিছুটা পার্থক্য হয়। এ জন্য বোর্ড চিন্তিত থাকে। ফাস্ট বোলারদের ইনজুরি ম্যানেজ করতে হয়। আমার শরীর ও বোলিংয়ের ধরন ভিন্ন হওয়ায় এবার আইপিএল খেলতে যাইনি। কাঁধের চোট ম্যানেজ করতে বিরতিতে গিয়েছি। ইনশা আল্লাহ ভবিষ্যতে খেলব। আফসোস নেই (হাসি)।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলাকে বিশেষ চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে তাসকিন বলেন, ‘জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতলে তেমন কৃতিত্ব নেই, কিন্তু হারলে সমালোচনা হয় বেশি। এক ম্যাচ হারলেই সমালোচনা শুরু হবে। ছোট দলের বিপক্ষে জিতলে কৃতিত্ব কম পাই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের অনেক সমালোচনা শুনতে হয়। তবে মাঠে নেমে প্রতিপক্ষ যেই হোক, সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করি। সবাই উন্নতির ধারায় থেকে বিশ্বকাপে ভালো করার চেষ্টা করছে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি নিয়ে তাসকিনের বার্তা
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ভালো খেলার পরও দলের মধ্যে মেকি আত্মবিশ্বাস ঢুকে পড়বে না তো? তাসকিন আহমেদ অবশ্য এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘আসলে ফেইক কনফিডেন্স নয়। ভালো করলে যেকোনো জায়গায়ই আত্মবিশ্বাস বাড়ে। আমরা জানি না যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশন কেমন হবে। ড্রপ ইন উইকেটে খেলা হতে পারে। আমাদের বেশির ভাগ খেলোয়াড়েরই যুক্তরাষ্ট্রে খেলার অভিজ্ঞতা কম। ওভাবে মানিয়ে নিতে হবে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘এখন বাংলাদেশে খেলছি, খেলতেও হবে। কন্ডিশন তো আমরা বদলাতে পারব না। যদি আরেকটু স্পোর্টিং কন্ডিশন হতো, তাহলে হয়তো ভালো হতো। তবু আমাদের অনেক ভালো ক্রিকেট খেলতে হচ্ছে। আরেকটা জিনিস, যখন যুক্তরাষ্ট্রে যাব, তখন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। একটা ভালো দিক হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের তিনটা ম্যাচ আছে।’
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আগামীকাল সন্ধ্যা ৬টায় সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।