এই বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশের দলের ঘোষণা দেওয়ার সময় দেরি হয়েছে। আইসিসিতে প্রেরণের সুযোগ মিস করায় বিসিবি এখনও বাংলাদেশের দল ঘোষণা করেনি। কোনো চূড়ান্ত নির্ধারণ হয়নি এবং এই বিষয়ে নির্ণায়ক আলোচনা অবশ্যই চলছে।
বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণা এখনও অন্যান্য
বিশ্বকাপের জন্য অনুষ্ঠানিকভাবে দল ঘোষণা হয়নি। পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ও স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখনও দলে রয়েছেন। বড় দলের অনেকে অতিরিক্ত সময় নিয়েছেন, যদিও ক্রিকেটে উন্নত দেশগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে দল ঘোষণা করেছে। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, নিউ জিল্যান্ড, এবং দক্ষিণ আফ্রিকা সহ। প্রোভিশনাল দল বিবেচনা অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ডের প্রতি আপাতত চূড়ান্ত স্কোয়াড হয়ে যেতে পারে, এবং পরিবর্তন সম্ভব।
বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের সমস্যা: বোর্ড এবং নির্বাচক কমিটির নির্দিষ্টি এখনও নেই
বাংলাদেশও এই পথ বেছে নিতে পারত কি না, প্রশ্নটি যৌক্তিকভাবেই উঠছে। দায়িত্ব নিয়ে সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে এখনও পর্যন্ত রাজি নয় বোর্ড বা নির্বাচক কমিটি।
দল ঘোষণার দেরি করার পেছনে যৌক্তিক কারণ আছে তাদেরও। তবে সরাসরি তা বলতে চাচ্ছেন না কেউই। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বোর্ড পরিচালক কারণটি ব্যাখ্যা করলেন।
“যে দলটা আমরা পাঠিয়েছি, সেটাতে পরে পরিবর্তন আসতে পারে। নির্বাচক ও কোচের কথা হচ্ছে, আমাদের কিছু ইস্যু আছে, বিশেষ করে ইনজুরি নিয়ে। তাদের কথা হচ্ছে, খেলার পরে (জিম্বাবুয়ে সিরিজ) সুবিধাজনক সময়ে আমরা একেবারে চূড়ান্ত দল ঘোষণা করব।”
সেই চোট সমস্যা বা ‘ইস্যুগুলোও’ খুব গোপনীয় কিছু নয়। চোট থেকে ফিট হয়ে ওঠার লড়াইয়ে আছেন সৌম্য সরকার। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচের স্কোয়াডে তাকে রাখা হয়নি এই কারণেই। খেলার মতো অবস্থায় আসতে পারলে শেষ দুই ম্যাচে তাকে মাঠে নামিয়ে দেখতে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচক কমিটি।
বিশ্বকাপে দলে পরিবর্তন: কেন?
সৌম্যর কারণেই দল ঘোষণায় দেরি কি না, এই প্রশ্ন উঠতেই সেই বোর্ড পরিচালক বললেন, “কারও নাম বলতে চাই না। শুধু সৌম্যরই নয়, আরও দু-একজনের ছোটখাটো ইস্যু আছে।”
‘ইস্যু’ বলতে এখানে মূলত পরখ করে দেখার ব্যাপার। দেড় বছর পর দলে ফেরানো হয়েছে মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনকে। চোটজর্জর ক্যারিয়ারে আরেকটি নতুন শুরুতে সাইফ কেমন করেন, ম্যাচে নিজেকে কতটা মেলে ধরতে পারেন, তার শরীরী কীভাবে সাড়া দেয়, এই ব্যাপারগুলি জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে দেখতে চান কোচিং স্টাফ, নির্বাচক কমিটি ও টিম ম্যানেজমেন্টের সবাই।
এছাড়াও তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন, আফিফ হোসেনরা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে কেমন করেন, সেটির প্রভাবও থাকতে পারে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে।
জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচের জন্য যে দল ঘোষণা করা হয়েছে, সেখান থেকে বিশ্বকাপ দলে দুটি পরিবর্তন অবধারিতই। সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমান নিশ্চিতভাবেই ঢুকবেন দলে। আরও পরিবর্তন প্রয়োজন কি না, সেই উত্তরই মূলত খোঁজা হবে জিম্বাবুয়ে সিরিজ দিয়ে।
জিম্বাবুয়ের সিরিজে সাইফ উদ্দিনের ফিটনেস ও পারফরম্যান্সে ম্যানেজমেন্টের চেষ্টা
টিম ম্যানেজমেন্ট ও নির্বাচকদের চোখে রাখা হবে সিরিজে সাইফ উদ্দিনের ফিটনেস এবং পারফরম্যান্সের প্রসঙ্গে। ছবি: বিসিবি।
এখানে আমন্ত্রণ জানাতে হতো যে, প্রয়োজন হলে দলে পরিবর্তন সম্ভব! এখানেও জানানো হয়েছে যে বিসিবি একটি আধিকারিক উপায়ে ঘোষণা করেছে প্রযোজনে দলে পরিবর্তন আনার সুযোগ। কিন্তু এটা প্রযোজন হলেই।
পরিচালকেরা মন্তব্য করেছেন, “বিতর্ক আমরা বুঝি না। এটা আপনারা (সংবাদমাধ্যম) বললে বলতে পারেন। দলের স্বার্থে, সবার ভালোর জন্যই সময় নেওয়া হচ্ছে। আর কিছু নয়। ইনজুরির ব্যাপার যেহেতু, কোচ ও নির্বাচকদের ভাবনা হলো, সময় যখন আছে, আমরা আরেকটু অপেক্ষা করতেই পারি।”
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলের ঘোষণা: বিতর্ক ও সংশোধন
দল ঘোষণা করা না হলেও বোর্ডের বিভিন্ন সূত্র ধরে আইসিসিতে পাঠানো ১৫ জনের নাম বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে চলেই আসছে। এতেই বরং বিতর্কের অবকাশ থাকে আরও বেশি। বিভিন্ন সূত্র থেকে নানা কিছু জানা যায়। এতে অনেক প্রেক্ষাপটই থাকে অস্পষ্ট কিংবা অস্বচ্ছ। আনুষ্ঠানিকভাবে পরিষ্কার বার্তা দিলে বিতর্ক ডালপালা মেলার সুযোগ পায় না।
নির্বাচকরাও এটা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানাতে নারাজ। তাদের কাজ দল নির্বাচন করা, সেটি তারা করেছেন। দল ঘোষণার সিদ্ধান্ত বোর্ডের। নানাজনের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নির্বাচকরাও একটু অস্বস্তিতে আছেন বলে জানা গেছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে যে মনোভাব বোঝা গেছে, তাতে দল ঘোষণা নিয়ে ‘লুকোচুরি’ চান না তারাও। ‘প্রয়োজন মনে করলে পরে দলে পরিবর্তন আনা হবে’- পরিষ্কারভাবে এই বার্তা দিয়ে দল ঘোষণা করে দেওয়ায় বিতর্কের কিছু তারা দেখেন না।
আপাতত এই অবস্থায়ই আছে দল ঘোষণার ব্যাপারটি। সব মিলিয়ে জিম্বাবুয়ে সিরিজের পরই হয়তো জানা যাবে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ১৫ অভিযাত্রীর নাম।
আগামী ৭ জুন ডালাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু বাংলাদেশের বিশ্বকাপ। পরের ম্যাচ ১০ জুন নিউ ইয়র্কে। পরের দুই ম্যাচে সেন্ট ভিনসেন্টে ১৩ জুন বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নেদারল্যান্ডস, ১৬ জুন নেপাল।