
শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সকাল সাড়ে নয়টায় দিন শুরু হতেই তৈরি হয় ম্যাচের আগের দিনের সেই পরিচিত পরিবেশ। রোদে ঝলমল করছে মাঠ, সম্প্রচারক দল ও মাঠকর্মীরা ব্যস্ত শেষ প্রস্তুতিতে, আর সবাই নিজেদের কাজ শেষ করতে ছুটছেন দ্রুতগতিতে।
শেরেবাংলায় ব্যস্ত সকাল ও ছবি তোলার মুহূর্ত
শহীদ জুয়েল স্ট্যান্ডে বসানো শুরু হয়েছে ক্যামেরার স্ট্যান্ড, ভিডিও ধারণের জন্য খুলছে লেন্স। বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শুরুর আগের দৃশ্য হিসেবে এটি নতুন কিছু নয়। ক্রিকেটাররা ড্রেসিংরুম ছাড়ছেন, কেউ স্ট্রেচিং করবেন, কেউ গা গরম করবেন।
ঠিক সেই সময় শোনা যায় ক্যামেরার ক্লিকের শব্দ। আলোকচিত্রীদের ব্যস্ততা আচমকাই বেড়ে যায়। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ছবি তুলছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। দুই দশকের বন্ধুত্ব, একই ড্রেসিংরুম, একই হোটেলে থাকা— সবকিছুর মাঝেও আজকের মুহূর্তটা ছিল আলাদা। কারণ, মুশফিকের সামনে অপেক্ষা করছে এক বিরল উপলক্ষ।
দুই দশকের যাত্রা শেষে মাইলফলকের দোরগোড়ায়
প্রায় ২০ বছরের ক্যারিয়ার শেষে মুশফিক দাঁড়িয়ে আছেন শততম টেস্টের দ্বারে। আগামীকাল নাজমুল যখন টস হয়ে দলের তালিকা জমা দেবেন, তখনই মুশফিক হয়ে উঠবেন বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার যিনি পৌঁছাবেন এই ঐতিহাসিক মাইলফলকে।
এমন গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষের আগের দিন মুশফিককে কেন্দ্র করে স্বাভাবিকভাবেই বাড়তি আগ্রহ তৈরি হয়। ইনডোরে ব্যাটিং অনুশীলনে যাওয়ার আগে তাঁকে থমকে যেতে হয়। যারা দুই দশক ধরে মুশফিকের খেলার ছবি তুলেছেন, তারাই এই বিশেষ মুহূর্ত স্মৃতিতে ধরে রাখতে চেয়েছেন।
অনুশীলনের পাশাপাশি আবেগঘন মুহূর্ত
শেরেবাংলার মূল মাঠ পেরিয়ে ইনডোরে যাওয়ার পথে প্রতিটি পদক্ষেপে যেন জমা হচ্ছিল ২০ বছরের স্মৃতিচিহ্ন। অনুশীলনের ব্যস্ততার মাঝেও সেই আবেগময় মুহূর্ত সবাইকে ছুঁয়ে যায়। মুশফিক ছিলেন শান্ত, মনোযোগী এবং সবসময়কার মতো হাস্যোজ্জ্বল— যা তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারের নিঃশব্দ প্রতিচ্ছবি।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু হওয়ার আগের মুহূর্তগুলো হয়ে রইল ঠিক এমনই— ছবি, হাসি, স্মৃতি আর পেশাদার অনুশীলনের সমন্বয়ে ভরা।