ভারতীয় ক্রিকেটে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মার আচরণ নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। প্রাক্তন ভারতীয় স্পিনার অমিত মিশ্রের মতে, খ্যাতি লাভের সাথে সাথে বিরাটের আচরণে পরিবর্তন এসেছে। মিশ্র বলেন, এখন তিনি বিরাটের সাথে তেমন কথা বলেন না। অন্যদিকে, রোহিত শর্মা আগের মতোই আছেন।
অমিত মিশ্র ভারতীয় দলের হয়ে ২২টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন। তিনি বিরাট ও রোহিত দু’জনের সাথেই খেলেছেন। মিশ্র জানান, “বিরাটের সাথে আমার সম্পর্ক আগের মতো নেই, কিন্তু ক্রিকেটার হিসেবে তাকে সম্মান করি। রোহিত এবং বিরাট সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের মানুষ। রোহিতের সাথে প্রথম দিন যেমন ছিলেন, এখনও তেমনই আছেন। কিন্তু বিরাট খ্যাতি লাভের সাথে সাথে বদলে গিয়েছেন।”
বিরাটের আচরণে পরিবর্তন
মিশ্র আরও বলেন, “বিরাটের সাথে আমার সম্পর্ক আগের মতো নেই। এখন আর কথা হয় না। যখন মানুষ খ্যাতি পায়, তখন তারা ভাবে অন্যরা তাদের কাছে কিছু পাওয়ার জন্য আসে। আমি কখনও তা করিনি। বিরাটকে ১৪ বছর বয়স থেকে চিনি। তখন সে শিঙাড়া খেত, পিৎজা খেত। কিন্তু অধিনায়ক বিরাটের সাথে সেই চিকুর অনেক পার্থক্য।”
আইপিএলে বিরাটের ঝামেলা
আইপিএলে ২০২৩ সালে লখনউ সুপার জায়ান্টসের সাথে বিরাটের ঝামেলা হয়েছিল। মিশ্র জানান, সেই সময় গৌতম গম্ভীর বিরাটের সাথে সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বিরাট এগিয়ে আসেননি। মিশ্র বলেন, “গম্ভীর বিরাটকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তার পরিবার কেমন আছে, কিন্তু বিরাট তাতে সাড়া দেননি। গম্ভীরের বড় হৃদয় ছিল, কিন্তু বিরাটের সেই মনোভাব ছিল না।”
নবীন উল হকের সাথে বিরাটের বিতর্ক
মিশ্র আরও বলেন, “বিরাট আমাদের ক্রিকেটারদের কটূক্তি করছিল। নবীন উল হকের সাথে বিরাটের ঝামেলা হয়েছিল। ম্যাচ শেষেও বিরাট থামেনি, তখনও তর্ক করছিল। সেই সময় গম্ভীরই এগিয়ে এসেছিলেন।”
মিশ্রর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
ভারতীয় দলে বিরাটের সাথে খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে মিশ্র বলেন, “একবার প্র্যাকটিসে বিরাট বলেছিল তার সাথে ফিটনেস ট্রেনিং করতে। আমি ভারী ওজন তুলতে রাজি ছিলাম না, কিন্তু দৌড়নোর জন্য রাজি ছিলাম। তারপরেই চোট পাই। তার পর থেকে আর সে ভাবে যোগাযোগ হয়নি। আমাকে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে বলা হয়। ১৬-১৭টা উইকেট নেওয়ার পরেও ভারতীয় দলে সুযোগ পাইনি। বিরাটকে জিজ্ঞাসা করলে, সে জানাবে বলেছিল, কিন্তু কিছুই জানায়নি।”
বিরাটের আচরণের প্রভাব
বিরাটের আচরণ নিয়ে নানা সময় প্রশ্ন উঠেছে। কখনও প্রাক্তন ক্রিকেটারেরা প্রশ্ন তুলেছেন। কখনও তাঁকে নিয়ে সতীর্থেরা যে অখুশি, সে তথ্যও প্রকাশ্যে এসেছে। ২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর থেকে একে একে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে নেতৃত্ব ছেড়ে দেন বিরাট। সেই সময় তৎকালীন বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিরাটের মতবিরোধ প্রকাশ্যে চলে আসে।
উপসংহার
মিশ্রর মতামত ভারতীয় ক্রিকেটের ভেতরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেছে। বিরাট কোহলির মতো খ্যাতিমান ক্রিকেটারের আচরণ নিয়ে এই ধরণের মন্তব্য আলোচনা সৃষ্টি করেছে। রোহিত শর্মার সাথে বিরাটের তুলনা এবং তাদের বিভিন্ন আচরণ ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের জন্য নতুন দৃষ্টিকোণ এনে দিয়েছে।